আখরোট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

আখরোট খাওয়ার উপকারিতা

বাদাম খেতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে একটি পরিচিত নাম হল আখরোট।এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,প্রোটিন, ফাইবার এবং ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় যা হৃদযন্ত্র ভালো রাখে মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায় ,ক্যান্সারের ঝুঁকি  কমায় ,অনিদ্রা দূর করে, এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আখরোট কালো বাদামি রঙের হয়ে থাকে। এই দুই ধরনের আখরোটে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এতে ফ্যাট আছে বলে অনেকেই বাদামে এড়িয়ে চলেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন এতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। আজকের এই লেখাতে আমরা জানবো আখরোট খাওয়ার উপকারিতা কি? কখন কীভাবে এবং কতটুকু পরিমাণে আখরোট খাওয়া প্রয়োজন এবং অতিরিক্ত পরিমাণে আখরোট সেবন করলে আমাদের কি কি অসুবিধা হতে পারে এই সবকিছু জানতে লেখাটি শেষ অবধি পড়তে থাকুন।


আখরোটের উপকারিতা,আখরোট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা,আখরোট খাওয়ার উপকারিতা,আখরোট,আখরোট খাওয়ার উপকারিতা,আখরোটের উপকারিতা ও অপকারিতা,আখরোট এর উপকারিতা,আখরোট খাওয়ার নিয়ম,আখরোট বাদামের উপকারিতা,অনেক উপকারি বাদাম আখরোট,আখরোটের উপকারিতা ৯৯% মানুষের অজানা,আখরোট এর উপকারিতা কি,আখরোট খাওয়ার নিয়ম কি,আখরোট বাদাম,আখরোট খাওয়ার নিয়ম,আখরোটের উপকারিতা কি,আখরোট খাওয়ার উপকারিতা কি,বাদামের উপকারিতা,আখরোট খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম,জাদুকরি খাবার আখরোট,আখরোট কি
আখরোট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা


আখরোট এক প্রকার বাদাম যা পুষ্টিগুণে ভরপুর নিয়মিত আখরোট সেবন করলে আপনি প্রচুর উপকারিতা পাবেন। 

আখরোট খাওয়ার উপকারিতা


 হৃদযন্ত্র ভালো রাখে

আখরোটের ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এই কারণে আখরোট কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম এর জন্য দারুন উপকারী ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড আমাদের দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিয়মিত আখরোট সেবন করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই আপনি আপনার হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে আখরোট সেবন করতে পারেন


মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে

আখরোট হলো আমাদের মস্তিষ্কের জন্য দারুন উপকারী একটি খাবার। আখরোট খেলে আপনার মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং বয়স জনিত স্নায়ু ক্ষয় নিয়ন্ত্রিত হয় এতে ফ্যাটি এসিড , ডিএইচএল অন্যান্য উপাদান উপস্থিত থাকে। যা মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ করে এর ফলে মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ চাপ কমে স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়


ওজন নিয়ন্ত্রণ করে

নিয়মিত আখরোট খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ আখরোট হলো ফাইবারের একটি ভালো উৎস এটি আপনার শরীরের হজম শক্তি এবং বিপরীত পরিপাক করার ক্ষমতা উন্নত করে ।এছাড়াও এতে প্রোটিন ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড উপস্থিত থাকে যা দেহের ওজন কে নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি দেহের ওজনকে নিয়ন্ত্রন করতে চান তাহলে আপনার খাদ্য তালিকায় আখরোট অবশ্যই রাখুন তবে একটি কথা মনে রাখবেন কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে আখরোট সেবন করা উচিত নয়।


ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে

আখরোটে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বিএবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট   যা সুস্থ ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। নিয়মিত আখরোট সেবন করলে ত্বকের বলিরেখা কমাতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। কারণ বয়সের সাথে সাথে মানুষের বলিরেখা দেখা দিতে শুরু করে যা ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে এর মূল কারণ হলো ফ্রিরেডিকেল ।আখরোটে থাকা ভিটামিন বি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই ফ্রিরেডিকেলস কমিয়ে ত্বককে সুন্দর করে !ফলে আপনার বলিরেখা কমতে শুরু করে।


ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস মারাত্মক আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে টাইপ টু ডায়াবেটিস চিকিৎসকরা বলেন যেকোনো ধরনের বাদামে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।যারা নিয়মিত সেবন করেন তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম ।এর কারণ আখরোটে ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের খাদ্যতালিকায় ফাইবার জাতীয় খাবার অবশ্যই রাখা প্রয়োজন


অনিদ্রা দূর করে

ঘুম ভালো হলে আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়  এবং এর পাশাপাশি দেহ সুস্থ সবল হয় ।মানুষের ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হলো মেলাটোনিন এই মেলাটোনিন দেহে সঠিক পরিমাণে থাকলে ঘুম ভালো হয় ।আর আখরোটে প্রচুর পরিমাণে মেলাটোনিন পাওয়া যায় ।তাই আপনি যদি আপনার অনিদ্রা দূর করে গভীর ঘুম উপভোগ করতে চান তাহলে আপনার খাদ্য তালিকায় আখরোট অবশ্যই রাখুন


ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড , পলিফ্যালনোনস অন্যান্য উপাদান আখরোটে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই উপাদানগুলো আন্টিক্যান্সার  বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যার ফলে আখরোট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ।আমেরিকান ক্যান্সার রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিদিন কয়েকটি আখরোট সেবন করলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়


শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়

আখরোে ভিটামিন ,মেলাটোনিন ,ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় ।যা একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার শিশুকে আখরোট হতে পারেন। তা হলে মস্তিষ্কের বিকাশ সঠিকভাবে হবে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে।নিয়মিতভাবে আখরোট সেবন করলে বয়স্ক মানুষদের স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়ে থাকে


রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

আধুনিক জীবনযাত্রা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে উচ্চরক্তচাপ এখন প্রায় ঘরে ঘরে দেখা যায় ।উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। আপনি যদি নিয়মিত আখরোট সেবন করেন তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এর কারণ হলো আখরোট এর ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ।তাই আপনি যদি উচ্চরক্তচাপ নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায়  অবশ্যই  আখরোট রাখা প্রয়োজন।


শুক্রাণুর মান বৃদ্ধি করে

পুরুষ দেহে শুক্রাণু মান বাড়াতে আখরোট বিশেষ ভূমিকা পালন করে ।আপনার খাদ্য তালিকায় আখরোট সংযোজন করলে তা শুক্রাণু এবং বীর্যের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। আপনি প্রতিদিন মধুর সাথে আখরোট মিশিয়ে সেবন করতে পারেন এতে সুফল পাবেন ।গবেষণায় দেখা যায় যে আখরোটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ চাপ কমায় যা পুরুষদের যৌন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন - উচ্চ ক্যালসিয়াম যুক্ত ১০টি খাবার

এছাড়া আখরোটের প্রচুর উপকারিতা আছে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, চুল ভালো রাখে এবং হাড় মজবুত করে ।তবে অন্যান্য খাবারের মতো আখরোট প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয় ।আপনি প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি আখরোট সেবন করতে পারেন ।আপনার সুবিধামতো দিনের যেকোনো সময় আপনি আখরোট সেবন করতে পারেন ।তবে সবচেয়ে ভালো হয় আগের দিন রাতে আখরোট  ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে সেবন করলে। এতে আপনি প্রচুর উপকারিতা পাবেন। এর সাথে কিন্তু আমাদের কিছু বিষয় অবশ্যই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে আখরোট সেবন করলে লিভারের সমস্যা হতে পারে আপনার যদি এলার্জির মতো সমস্যা থাকে তাহলে আখরোট সেবন করার আগে অবশ্যই সচেতন হওয়া প্রয়োজন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন