স্টক মার্কেট বা শেয়ার মার্কেট কি?

স্টক মার্কেট বা শেয়ার মার্কেট কি? নামের মধ্যেই আছে মার্কেট। অর্থাৎ এটা একটা বাজার। তো একটা বাজার যেভাবে কাজ করে সেই ভাবে একটা স্টক মার্কেট বা শেয়ার মার্কেটও কাজ করে। বাজারের মধ্যে কোন জিনিসের সাপ্লাই যদি কমে যায় এবং ডিমান্ড  যদি বেড়ে যায় তবে জিনিসটার দাম সাথে সাথে বেড়ে যায়। একইভাবে যদি কোন প্রোডাক্টের সাপ্লাই অনেক বেশি হয় এবং ডিমান্ড অনেক কম হয়। তবে সেই জিনিসটার দাম কমে যায়। আর এই কনসেপ্টেটা শেয়ার মার্কেট কিংবা স্টক মার্কেটে চলে।


বলতে পারেন আমাদের সমাজে দুধরনের লোক আছে। যারা মনে করে যে, স্টক মার্কেট হলো একটা অন্ধ কুয়ো যেখানে যত টাকা ইনভেস্ট করুন না কেন সেটা আর আপনি কোনদিন ফিরে পাবে না। আর সাধারনত এই ধরনের লোকরা স্টক মার্কেটকে একটা জুয়ার মত মনে করে। আবার অপর দিকে আরো এক ধরনের মানুষ আছে যারা মনে করে, ঠিকঠাক ভাবে বিচার বিবেচনা করে স্টক মার্কেটে যদি ইনভেস্ট করা যায়। তবে সেখান থেকে অনেক বেশি প্রফিট কমানো যেতে পারে। আর এই ধরণের মানুষরা স্টক মার্কেটে একটা ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে দেখেন। তবে দুটো চিন্তাভাবনায় ঠিক হতে পারে। আপনার যদি স্টক মার্কেট সম্পর্কে নলেজ এবং এক্সপেরিয়েন্স না থাকে তবে এটা আপনার অনেক ক্ষতি করে দিতে পারে। অপরদিকে আপনার কাছে যদি সঠিক ইনফরমেশন এবং এক্সপেরিয়েন্স থাকে তবে ঐ স্টক মার্কেট থেকে আপনি প্রফিটও কামাতে পারেন।  তবে চলুন আজকে এই ছোট্ট  লেখটার মধ্যে বেসিকালী স্টক মার্কেট কিভাবে কাজ করে সেটা সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করা যাক। তবে তার সাথে আমি এটাও এড করে দিবো যে এই লেখায় যে  সমস্ত ইনফরমেশন আমি দেবো সেগুলো শুধুমাত্র এডুকেশন পারপাসের জন্য। এই লেখাটির সাহায্যে আমি আপনাকে স্টক মার্কেটে ইনভেস্টমেন্ট করার কথা বলবো না। কারণ সেটা আপনার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার।


শেয়ার মার্কেট,শেয়ার বাজার কি,স্টক মার্কেট,শেয়ার মার্কেট কি,শেয়ার ব্যবসা শিখুন,শেয়ার বাজার,শেয়ার মার্কেটের খবর,শেয়ার মার্কেট কি,শেয়ার মার্কেট টিপস,শেয়ার মার্কেট টুডে,শেয়ার বাজার শিখতে চাই,শেয়ার মার্কেট পড়ছে কেন,শেয়ার মার্কেট বিজনেস,শেয়ার বাজার,শেয়ার মার্কেট কিভাবে কাজ করে,শেয়ার বাজারে টাকা কামানোর উপায়,শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ,শেয়ার মার্কেট ইনকাম,ভারতীয় শেয়ার মার্কেট,স্টক মার্কেট পতন,স্টক মার্কেট শিখুন
শেয়ার মার্কেট

স্টক মার্কেট সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জানতে হবে যে একটা স্টক কি? একটা স্টক কিংবা অন্য ভাষায় যাকে শেয়ার  বলা হয়‌। সেটা হলো একটা কোম্পানির তরফ থেকে জারি করা ফাইনান্সিয়াল টোকেন। যার মালিক যদি আপনি হন। তবে আপনি ওই কোম্পানির অল্প কিছু অংশের মালিকানা আধীকারী হয়ে যান। এক্সযাম্পল হিসাবে  যদি টাটা কোম্পানির এক হাজারটা  শেয়ার থাকে। তার মধ্যে আপনি একটা শেয়ার কিনে নেন। তবে আপনি টাটা কোম্পানির এক হাজার ভাগের এক ভাগের মালিক হয়ে যাবেন। তবে রিয়েল লাইফের টাটা কোম্পানির মাত্র একহাজারটা শেয়ার নেই  লক্ষ লক্ষ শেয়ার আছে। বেসিক্যালি পয়েন্ট হল যে, যদি আপনি কোন কোম্পানির শেয়ার কিংবা স্টকের  মালিক হন। তবে আপনি ওই কোম্পানিটারও মালিক হয়ে যান। এবার যেভাবে ওই কোম্পানির ভ্যালু বাড়বে বা কমবে সেইভাবে আপনার শেয়ারও ভ্যালু বাড়বে কমবে। এছাড়াও স্টক  দুধরনের হয়। একটা কমন স্টক আর একটা প্রেফারড স্টক। কমন শেয়ারের যারা মালিক হয়। তারা ওই কোম্পানিতে ভোটিং রাইট পায়। কিন্তু প্রেফারড শেয়ার যাদের কাছে থাকে তারা কোম্পানিতে ভোটিং রাইট পায় না। কোন কোম্পানির কমন স্টকের মালিকরা ঐ কোম্পানির বড় বড় ভোটিং ডিসিশনে ভোট  করতে পারে। তবে প্রেফারড শেয়ার যাদের কাছে থাকে তারা কোম্পানি ডিভিডেন্ড পায়‌। ডিভিডেন্ড হল কোম্পানির লাভের একটা পোরশন। যেটা শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়। সেটা বছরে একবার হতে পারে দু বছরে একবার হতে পারে। মানে ডিভিডেন্ড কখন এবং কতবার দেওয়া হবে সেটা কোম্পানির উপর ডিপেন্ড করে।


ব্যাপারগুলো এর থেকে অনেক বেশি কমপ্লিকেটেড হতে পারে।  তবে এই সিম্পল আন্ডারস্ট্যান্ডিং গুলো একটা বেসিক ইনভেস্টরের থাকা দরকার। এবার প্রশ্ন হল বড় বড় কোম্পানিগুলো নিজেদের শেয়ার অর্থাৎ মালিকানা বেঁচে কেন? সম্পন্ন  শেয়ারটাতো তারা নিজেদের কাছেই রাখতে পারে এবং পুরো প্রফিটা  তারা নিজেরাই কমাতে পারে। কিন্তু সেটা না করে বড় বড় কোম্পানিরা তাদের শেয়ার মার্কেটে বিক্রি করে কিন্তু কেন? এর আন্সার হলেও খুবই সিম্পল। মার্কেট থেকে টাকা তোলার জন্য শেয়ার বা স্টক সেল  করে। কোন কোম্পানি প্রচুর পরিমাণে টাকা সংগ্রহ করতে পারে। কোন কাজ না করে কিংবা কোন নতুন প্রোডাক্ট বিক্রি না করেই । একটা কোম্পানি স্টক তখনই বিক্রি হয় যখন মানুষ বুঝতে পারে যে ভবিষ্যতে এই কোম্পানিটা অনেক বড় জায়গায় যেতে পারে। এর মানে একটা ছোট কোম্পানিও তার ভবিষ্যতের উপর ডিপেন্ড করে মার্কেট থেকে প্রচুর টাকা সংগ্রহ করতে পারে। এবার যদি কোন কোম্পানিকে শেয়ার বা স্টক সেল করতে হয়। তবে তার জন্য একটা জায়গা চাই। আর এখানে আসে স্টক মার্কেট। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কোম্পানির শেয়ার শেয়ার মার্কেটে লিস্ট করে একটা মিনিমাম প্রাইস রেখে। যাকে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বলা হয় অথবা শর্টকাটে আইপিও। আর এই কাজটা করার সাথে সাথেই কোন প্রাইভেট কোম্পানি পাবলিক কোম্পানিতে পরিণত হয়ে যায়। এবার যখন কোন কোম্পানি তাদের শেয়ারকে শেয়ার মার্কেটে লিস্ট করে। তখন সাধারণ মানুষ এই শেয়ার কিনতে বা বেচতে পারে।



এবার এই শেয়ার গুলোর দাম উঠানামা করে কোন কোম্পানির কাজের ধরণ, তাদের কাজের পরিমাণ ,তার সাথে সাধারণ মানুষের কোম্পানিটির  সম্পর্কে কি চিন্তা-ভাবনা রাখে আর এসব ছাড়াও থাকে এক্সপার্টের ওপিনিয়ন। তবে এই ফ্লাটচুয়েশনটা বেশিরভাগ ডিপেন্ড করে কোম্পানির কত ইনকাম হচ্ছে সেটার উপর। আর একে মেজার করা হয় পিইরেশিওর মাধ্যমে  অর্থাৎ প্রাইজ টু আর্নিং রেশিও। অর্থাৎ একটা কোম্পানিতে কত টাকা লাগালে কত টাকা ইনকাম হবে। এবার একটু বোঝা যাচ্ছে একটা শেয়ারের দামে এই ফ্লাটচুয়েশনটা  হয় কেন? একটা শেয়ার মার্কেটের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ইনভেস্টর থাকে এবং লক্ষ লক্ষ ইন্ডিভিজুয়াল ট্রেডার থাকে। তারা প্রত্যেকেই একটা কোম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ধারণা রাখেন। যার জন্য তারা ওই কোম্পানির শেয়ারের সঙ্গে ইন্ডিভিজুয়াল ডিসিশন নেয়।কেউ শেয়ার কিনে কিংবা শেয়ার বেঁচে।এই সবকিছুর ডিসিশন একত্রিত হয়ে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে কিংবা কমিয়ে দিতে পারে। যদি বেশিরভাগ মানুষ একটা শেয়ারকে কেনে তবে সেই শেয়ারটা দাম বেড়ে যায়। আর যদি বেশিরভাগ মানুষই একটা বেছে দেয়। তবে শেয়ারের দাম কমে যায়। অর্থাৎ ঘুরে ফিরে সেই একই জায়গায় আমরা চলে এলাম সাপ্লাই  এবং ডিমান্ড। প্রত্যেক ইউনিট স্টক কেনা বা বেচার জন্য একজন ক্রেতা চাই এবং একজন বিক্রেতা। যদি ওই শেয়ারটাকে কেনার জন্য ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। তখন শেয়ারটার দামও বেড়ে যায়। এবার যদি ওই সেটাকেই বিক্রি করার জন্য অনেক বেশি বিক্রেতা চলে আসে। তখন শেয়ারটার দাম পড়ে যায়। স্টক মার্কেটের ভাষায় এটাকে  বিগ আস্ক  স্পেড বলা হয়।  


আরও পড়ুন - শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার নিয়ম


স্টক মার্কেটের শুরুর দিকে এই কেনা বেচাটা ম্যানুয়ালি হতো একটা রিয়েল মার্কেটের মধ্যে। বর্তমানে এটা অটোমেটিক্যালি সফটওয়ারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই কারণে আগের থেকে এখন স্টক মার্কেট খুব দ্রুত গতিতে ওঠা-নামা করতে পারে‌। এরপর আরও একটা প্রশ্ন আপনার সামনে উঠে আসতে পারে। সেটা হল, আপনি আপনার পরিশ্রম করে ইনকাম করা টাকাকে স্টক মার্কেটের লাগাবেনই বা কেন? যখন আমাদের কাছে বেশিরভাগ মানুষেরই এই সম্পর্কে খুব একটা বেশি আইডিয়া নেই। আর তাছাড়া আপনি আপনার টাকাকে ব্যাংকে রেখে 45% ইয়ারলি ইনকাম করতেই পারেন।  সেক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি ও নেই । এরা আনসারটা  হলো খুবই সিম্পল। যদি আপনি স্টক মার্কেটে ইনভেস্টমেন্ট সঠিকভাবে করতে পারেন। তবে আপনি 45% এর থেকে অনেক বেশি প্রফিট কামাতে পারবেন। মানে খুবই সাধারণভাবে যদি ব্যাংকে রেখে যদি আপনি 45% পান। আর  স্টক মার্কেট থেকে যদি আপনি 89% ইনকাম করতে পারেন। তবে আপনি আপনার ব্যাংকে রাখা টাকার থেকে বেশিতো ইনকাম করছেন। কিন্তু ভেবেচিন্তে করতে হবে। তাহলে এবার প্রশ্ন হল স্টক মার্কেটে ইনভেস্টমেন্ট কিভাবে করা যায়?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন