শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার নিয়ম, যা যা জানতে হবে ।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী


আজকাল খুব সহজেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা যায়। তবুও শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার সময় বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই সতর্ক থেকে এবং বুঝেশুনে বিনিয়োগ করা উচিত। না হলে লাভের চেয়ে লসের সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায়। তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী । 

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ



শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে প্রথমেই যে জিনিসটি সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত সেটা হল ইনভেস্টমেন্ট নিজের আবিলিটি এবং প্রেফারেন্স।  এব্যাপারে প্রথমেই যে জিনিসটি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল ইনভেস্টমেন্টের টাইম হরাইজন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কোন সময় পর্যন্ত ইনভেস্টমেন্টটি কন্টিনিউ করতে চান বা কতদিন পর তার এই টাকাটা দরকার হতে পারে। একজন ইনভেস্টর কত সময় জন্য তার ইনভেস্টমেন্ট হোল্ড করতে পারবেন তার ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে যে তিনি আসলে কোন স্ট্রোকে ইনভেস্ট করবেন। এছাড়াও ইনভেস্টর সামর্থ্য রিস্ক নেওয়ার সামর্থ্য একটা ইম্পর্টেন্ট ফ্যাক্টর। কোন ইনভেস্টর যদি বেশি রিস্ক নিতে সক্ষম হন তাহলে তিনি তুলনামূলক বেশি রিস্কি স্টক পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু কেউ যদি নিতে পারেন তাহলে তাকে সেভাবেই তুলনামূলক নিরাপদে ইনভেস্ট করা উচিত। 

আবার কোন ইনভেস্ট কি উদ্দেশ্যে করেছেন অর্থাৎ তার এই ইনভেস্টমেন্টের পেছনে ফিনান্সিয়াল গোল কি সেটার উপরে ইনভেসমেন্ট ডিসিশন অনেকটা ডিপেন্ড করে। যিনি রিট্যামেন্ট ফান্ড তৈরীর জন্য লঙ্গর টার্ম ইনভেসমেন্ট করছেন আবার যিনি হয়তো নিজের সেভিংস ফেলে রেখে কিছু বার্তি আয়ের জন্য ইনভেস্ট করছেন তাদের দুইজনের ইনভেসমেন্ট ডিসিশন গুলো ভিন্ন-ভিন্ন হবে। ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস হলো একটি স্টকের প্রকৃত নায্য বাজার মূল্য নির্ধারণের একটি পদ্ধতি। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের তিনটি আংশ আছে। কোম্পান এনালাইসিস, সেক্টর এনালাইসিস এবং ভ্যালুয়েশন। যে কোন কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর প্রথম ধাপ হলো কোম্পানিটি সম্পর্কে ডিটেলস ইনফরমেশন জানা।  কোম্পানি এনালাইসিস করতে গেলে কোম্পানিটির প্রোডাক্ট কাস্টমাইজেশন  ডিস্ট্রিবিউশন প্যানেল, সোর্সিংয়ের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ।

 

অন্যান্য একই রকম কোম্পানির তুলনায় এই কোম্পানিটির যদি কোন কম্পারেটিভ এডভান্স থাকে যেমন কোন ইউনিক বা পপুলার অ্যাক্টর প্যাটেন্ট তাহলে অন্য কোম্পানি গুলোর জন্য এই কোম্পানির সাথে কমপ্লিট করা ডিফিকাল্ট  হবে। এছাড়াও কোম্পানির রেভিনিউ , রেভিনিউ গ্রোথ এবং প্রফিবিলিটি কেমন এবং তাদের প্রফিটের কি পরিমান তারা ডিভিডেন্ট হিসেবে ডিস্ট্রিবিউট করে সেটিও ইনভেসমেন্ট ডিসিশন এক্ষেত্রে একটি ফ্যাক্টর। কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার স্ট্রাকচার কেমন সেটিও বিবেচনা করা উচিত। কোন  কোম্পানিতে যদি স্পন্সর বা মূল মালিকরা খুবই কম শেয়ার হোল্ড করে তাদের শেয়ার বিক্রি করা শুরু করে তাহলে তো অনেক সময় একটি খারাপ সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর কোন কম্পানিতে যদি মিচুয়্যাল ফান্ড গুলো বেশি ইনভেস্ট করে তাহলে সে দিকে আবার মোটামুটি ডিপেন্ডেবল স্টক হিসেবে বিবেচনা করা হয় । এছাড়া  কোম্পানিটির স্টক অন্যান্য কম্পারেয়াবল কোম্পানির তুলনায় কতটা ভাল বা খারাপ ভাবে প্যারফর্ম করে সেটিও একটি ইম্পর্টেন্ট ফ্যাক্টর। যেমন কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম যদি একই সেক্টরের অন্যান্য কোম্পানি তুলনায় অতিরিক্ত ওঠানামা করে তাহলে খানিকটা সতর্কতার সাথে ট্রেড করা উচিত।


একটি ফর্মার ওয়েবসাইট থেকে কোম্পানিটির ম্যানেজমেন্ট প্রমোটার  এবং প্রোডাক্ট গুলো সম্পর্কে ধারণা নেয়া হয় তথ্য সংগ্রহের একটি উপযোগী মাধ্যম। এর বিপরীতে ইনভেস্টর চাইলে স্টক মার্কেট বা কোম্পানির ওয়েব সাইট থেকে কোম্পানিটির অ্যানুয়াল রিপোর্ট ডাউনলোড করে পড়ে দেখতে পারে। এতে করে এই ডকুমেন্টগুলোর মাধ্যমে একটি কোম্পানি সম্পর্কে ইনভেস্টরস পুরোপুরি ধারণা পাবে। কোন কোম্পানি  যে সেক্টরের বিজনেস করে সেই সেক্টরের ফিউচার কিরকম সেই কোম্পানির শেয়ার ইনভেস্টমেন্টের জন্য একটি বড় ফ্যাক্টর। কোন সেক্টর যদি এমন হয় যে  সে সেক্টর ভবিষ্যতে ডিক্লাইন করবে সে সেক্টরের কোম্পানিগুলোর long-term ইনভেসমেন্ট এর জন্য হয়তো ততটা ভাল হবে না ।  আবার যে সেক্টরের কোম্পানির ভবিষ্যতে গ্রো করার  সম্ভবনা বেশি সেই সেক্টরের কোম্পানির ভবিষ্যতে ব্যবসা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। 


এছাড়াও কোন কোম্পানি যে সেক্টরের ব্যাবসা করছে সেই সেক্টরের  অন্যান্য প্লেয়ার কোম্পানির সাথে কম্পারেটিভ এনালাইসিস করতে হয়। বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল রেশিও এনালাইসিস এক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। এ বিষয়ে গুলো কন্সসিডার করে এবং বুঝে শেয়ারের ইনভেস্ট করলে অনেকটা কম  ঝুঁকিতে রিটার্ন আর্ন  করা সম্ভব।যদিও অনেকে এগুলো সম্পর্কে না জেনে এবং শেয়ারের বিনিয়োগ সম্পর্কে না বুঝে ইনভেস্ট করে অনেক সময় বড় লস হয়ে পড়ে যান।ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের সর্বশেষ স্টেপ হচ্ছে কোম্পানি ভেলারেশন যেকোন ভাল কোম্পানি শেয়ারো বেশি প্রাইসে কেনটা একটা বেড ইনভেস্ট হতে পারে। সফিস্টিকেটেড ইনভাটার কোন কোম্পানি ক্যাশ ফ্লো এনালাইসিস করে ঐ কোম্পানির ফেয়ার ভ্যালু সম্পর্কে আইডিয়া নিয়ে থাকেন। 


আরও পড়ুন -  স্টক মার্কেট বা শেয়ার মার্কেট কি?

                           স্বল্প পুঁজিতে বিজনেস আইডিয়া 


কিছু প্রচলিত ভ্যারিয়েশন মাল্টিপল যেমন price to earnings  P/E Ratio, price to sell P/S Ratio, price to book Per/B Ratio  ইত্যাদির মাধ্যমে কোন কোম্পানির ভ্যারিয়েশন ইসটিমেন্ট করা যায়। কোন কোম্পানির শেয়ারের বর্তমান প্রাইসকে সেই কোম্পানির আর্নিং শেয়ার দিয়ে ভাগ করলে পিই রেশিও পাওয়া যায়। সাধারণভাবে পিই রেশিও কম হলে সে দিকে বেশি প্রেফেরাবল শেয়ার হিসেবে কন্সসিডার করা হয়। পিই  রেশিও ছাড়াও আরো দুইটি রেশিও ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ দুইটি হলো  পিবিএস রেশিও এবং পিএস রেশিও। শেয়ারের দামকে কোম্পানির ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট থাকার নেট অ্যাসেট ভ্যালু দিয়ে ভাগ করলে যেটি পাওয়া যায় সেদিকে প্রাইট টু বুক বা পিবি রেশিও বলে।এটি একের থেকে কম হওয়া মানে কোম্পানিটির শেয়ারটি নেট  অ্যাসেটের মূল্য থেকেও কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ফাইনালি কোন কোম্পানি মার্কেট ভ্যালুকে তার অ্যানুয়াল সেল্স দিয়ে ভাগ করলে তার পি এস রেশিও পাওয়া যায়। যেসব কোম্পানির নেট প্রফিট মার্জিন বেশি ওঠানামা করে সে সেসব কোম্পানির ভ্যারিয়েশন ডিটারমাইন করার জন্য পি এস রেশিও বেশ হেল্প ফুল। তবে ভিন্ন ফর্মের মধ্যকার কম্পারিজন এবং একই ইন্ডাস্ট্রির এভারেজর  জন্য জরুরী বিষয়টি ইনভেস্টরদের মাথায় রাখা উচিত। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস বেশ বিস্তৃত একটি বিষয় যা আসলে একটি লেখাতে কাভার করা সম্ভব নয় ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন