তেতুল খাওয়ার উপকারিতা

আপনার দেহের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগগুলো দূর করতে পারে তেঁতুল  তেঁতুল নিয়ে আমাদের বেশির ভাগেরই মনে বিভ্রান্তি রয়েছে, যে তেঁতুল খেলে শরীরের সব রক্ত পানি হয়ে যায়। আবার কারও মনে হয় যে তেঁতুল খেলে বুদ্ধি নষ্ট হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে তেঁতুল পুরুষ মানুষের একেবারে খাওয়া উচিত নয়। এসবকটি ধারণা ভুল। আসল কথা হল আমাদের দেহে বেশ কিছু ভয়ঙ্কর রোগ দূর করতে পারে তেঁতুল। আবার কোনো কোনো রোগ থাকলে তেঁতুল একেবারে খাওয়া যাবেনা। তাই আজকের লেখাতে আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেবো যে কোন কোন রোগ শুধুমাত্র তেঁতুল দিয়ে দূর করতে পারবেন। আর কোন কোন রোগ থাকলে তেঁতুল একেবারেই খাবেন না। 


রোগ দূর করার জন্য কোন তেঁতুল গুলো খাবেন আর কোন নিয়মে খাবেন। শুধুমাত্র তেঁতুল খেলে যে রোগ দূর হবে তা নয়। ঔষধের মতো করে আপনাকে তা সেবন করতে হবে।তেঁতুল বললে আমাদের মাথায় সর্বপ্রথম পাকা তেঁতুলের কথাই আসে। পাকা তেঁতুল কিন্তু দুই ধরনের এক নতুন পাকা তেঁতুল এবং দুই পুরাতন পাকা তেঁতুল। রোগ দূর করতে পাকা তেঁতুল ছাড়াও কাঁচা তেঁতুল, তেঁতুল গাছের পাতা এবং তেঁতুলের বীজ সবকিছুই ঔষধের মত কাজ করে। এখন আপনাকে জানতে হবে যে আপনার কোন রোগটি কিভাবে আপনি দূর করতে পারবেন। 


তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক জেনে নিন,তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা,তেঁতুলের উপকারিতা,তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা,তেতুলের উপকারিতা,তেতুল খাওয়ার উপকারিতা,তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার উপকারিতা,তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম,তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা,তেঁতুল খেলে কি হয়,তেতুলের অবিশ্বাস্য সাস্থ্য উপকারিত,তেতুলের সাস্থ্য উপকারিতা,তেতুল খাওয়ার নিয়ম,তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা,তেতুল,তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা কি,তেঁতুল,তেতুলের উপকারিতা ও অসাধারন ১০টি গুনাগুন।
তেতুল খাওয়ার উপকারিতা


যদি আপনি কাঁচা তেঁতুল খান তাহলে আপনার গ্যাস এবং এসিডিটি কমে যাবে। গ্যাস এসিডিটি নিরসনে আপনি কাঁচা তেঁতুল পানির ভেতরে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করতে পারেন। এক্ষত্রে একটি বড় কাঁচা তেঁতুল ছোট ছোট টুকরো করে এক গ্লাস পানির মধ্যে রাত্রে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলায় এই পানি পান করলে আপনার গ্যাস অ্যাসিডিটি কমে যাবে। কিন্তু এটা আপনাকে খাওয়ার আধাঘন্টা পরে পান করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি এই কাঁচা তেঁতুল খান তাহলে আপনার কয়েকটি রোগ বেড়ে যাবে। যেমন, আপনার কফ-কাশি এবং আপনার শরীরের অগ্নি অর্থাৎ বাইল  বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এটা উষ্ণবীর্য হওয়ার কারণে আপনার দেহ অনেক বেশি গরম হয়ে যাবে এবং যাদের শরীরে ইনফ্লামেশন রয়েছে জ্বালাপোড়া রয়েছে তাদের এই রোগগুলো বেড়ে যাবে। কাজেই আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনি কাঁচা তেঁতুল কেন খাবেন এবং কেন খাবেন না। 



এরপরে আসি পাকা তেঁতুলের কথা আমাদের দেহের বেশিরভাগ রোগ দূর করতে এই পাকা তেতুল সবচেয়ে বেশি কাজ করে। পাকা তেতুল আপনি খেলে আপনার হাই ব্লাড প্রেসার, ট্রাই গ্লিসারাইড, দেহের খারাপ কোলেস্টরেল ইত্যাদি একেবারে দূর করতে পারবেন। এই রোগ গুলোর জন্য পাকা তেঁতুল সবচেয়ে উৎকৃষ্ট কাজ করে থাকে।দেখুন আমার এখানে যে তেঁতুল গুলো রয়েছে এটা পাকা তেঁতুল এবং পুরাতন পাকা তেঁতুল। রোগ দূর করার জন্য আপনাকে এই পুরাতন পাকা তেঁতুলই নিতে হবে। পুরাতন পাকা তেঁতুল গুলো নিয়ে প্রথমে ভাল করে ধুয়ে নিন। ধোঁয়ার পরে এটাকে এক গ্লাস পানির ভেতরে রেখে দিন। একটি সম্পূর্ণ পাকা তেঁতুল একগ্লাস পানিতে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এই ভেজানো  পাকা তেঁতুল খুব ভালো করে কষিয়ে এটার ক্বাথ তৈরি করে নিতে হবে।  যাদের হাই ব্লাড প্রেসার রয়েছে রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বেশি সেই সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত তারা এইভাবে তেঁতুলের ক্বাথ সেবন করবেন। এছাড়াও যাদের লিভারের রোগ রয়েছে ফ্যাটি লিভার সহ লিভারের যেকোনো ধরনের রোগে এইভাবে পাকা তেঁতুল খেতে পারেন। 


যাঁদের হজম হয় না খাবার খাওয়ার পরে গ্যাস বদহজম হয়ে যায় তারা এইভাবে পাকা‌ তেঁতুল খেলে খুব ভালো উপকার পাবেন। এছাড়া যাদের কফ-কাশি ,বুকে জমাট বাধা কাশি, খুসখুসে কাশি বা গলাব্যথা রয়েছে তারা এই নিয়মে পুরাতন পাকা তেঁতুল সেবন করবেন। কখন সেবন করবেন? সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বাসি পেটে এটা একেবারেই সেবন করবেন না। বরং  আপনি সকালের খাবার এবং দুপুরের খাবারের মাঝামাঝি একটা সময়ে এটা সেবন করতে পারেন। কিন্তু যাদের ব্লাড প্রেসার কম তারা যদি লিভারের রোগ কফ-কাশি সহ গ্যাস ,বদহজম ইত্যাদি দূর করতে পাকা তেঁতুলের ক্বাথ সেবন করতে চান। তাহলে এর সঙ্গে ২ থেকে ৩ চিমটি পরিমাণ বিটসল্ট বা সন্ধব লবণ মিশিয়ে খাবেন। যখন আপনি এর সঙ্গে লবণ মিশিয়ে খাবেন তখন আপনার ব্লাড প্রেসার আর কমে যাবে না। এই পাকা তেঁতুল খাওয়া মাত্রই আপনার পেট সাফ হয়ে যাবে। 


যাদের পেট সাফ হয়না কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে বা অশ্ব পাইলসের মতো রোগ রয়েছে তারা এইভাবে পাকা তেঁতুল খেলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন। তেঁতুল খাওয়ার পরে যে তেঁতুলের বীজটা থেকে গেল এই তেঁতুলের বীজ অত্যন্ত উপকারী। এই বীজ আপনি একেবারে ফেলে দেবেন না। বরং এই বীজটা গুঁড়ো করে নিন। তেঁতুলের বীজ শুকিয়ে সেই বীজ  যদি আপনি গুঁড়ো করে নিতে পারেন তাহলে সেই বীজ খেলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কখনো আপনার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাবে না। কিভাবে সেবন করবেন? তেঁতুল বীজের গুঁড়া ১ চামচ এক গ্লাস পানির মধ্যে রাতে ভিজিয়ে রেখে  সকাল বেলায় উঠে সেটা আপনি পান করুন। এটা আপনি খাবারের পূর্বে পান করবেন। তাহলে আপনার সুগার একেবারেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 



সেই সঙ্গে সঙ্গে যাদের শরীর অত্যন্ত দুর্বল ,যেসব পুরুষের যৌনশক্তি অত্যন্ত কম, যাদের দ্রুত বীর্যপাত হয় এবং যাদের স্পার্ম কাউন্ট কম, তারা এইভাবে তেতুল বিচির গুঁড়ো খেলে খুব ভালো উপকার পাবেন। তবে এক্ষেত্রে পুরুষের দুর্বলতা এবং শরীরের গোপন শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য আপনি তেঁতুল বীজের গুড়ার রাতের বেলায় এক গ্লাস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতেও খুব ভালো উপকার পাওয়া যাবে। যেসব মহিলারা তেঁতুল বীজের গুড়ার সেবন করবেন তাদের জরায়ুর শক্তি বহুগুণ বেড়ে যাবে। এছাড়া তেঁতুল খাওয়া মহিলাদের জন্য যেমন ভাল পুরুষের জন্য তেমনি ভাল। উভয়ের জন্য তেঁতুল নির্দিষ্ট পরিমান খাওয়া মানেই দেহের বিভিন্ন রোগ কে বিদায় দেওয়ার। যদি কারো পুরাতন আমাশয় থাকে সেক্ষেত্রে তেঁতুল গাছের কচি পাতা সেদ্ধ করে ক্বাথ তৈরি করে সেটা টানা সাতদিন নিয়মিত সেবন করলে রক্ত আমাশয় এবং পুরাতন আমাশয় একেবারে ভালো করতে পারবেন। এছাড়া আপনাদের যদি শরীরে ব্যথা হয়ে থাকে এবং কোনো কারণে যদি আঘাত লেগে থাকে তাহলে তেঁতুল গাছের ছাল দিয়ে ক্বাথ তৈরি করে অর্থাৎ তেঁতুল গাছের ছাল সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ক্ষতস্থানে ধুয়ে ফেললে এবং গরম গরম পানি যদি ব্যবহার করা যায় পুরাতন ব্যথা দূর করার জন্য তাহলে খুব ভালো উপকার পাবেন।

 

তেঁতুলের অপকারিতা কি? 


তেঁতুল জমাট বাঁধা রক্তকে পাতলা করে। এই কারণে যাদের শরীরের রক্ত অত্যন্ত পাতলা তারা তেঁতুল খাবেন না। যাদের ইন্টার্নাল ব্লিডিং  হচ্ছে তারা তেঁতুল খাবেন না। যাদের গ্লুকোজের মাত্রা অত্যন্ত কম এবং যাদের ব্লাড প্রেসার খুবই কম তারাও তেঁতুল খাবেন না। আর যে রোগ গুলো দূর করার জন্য তেঁতুল খাবেন তা টানা একুশ দিনের বেশি কখনোই একনাগাড়ে খাবেন না ।  ২১ দিন পরে দরকার হলে বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারেন। আজকের লেখাটি ভাল লেগে থাকলে এই নিয়মে তেঁতুল খেতে পারেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন