টিউবলেস টায়ার কি ? টিউবলেস টায়ারের সুবিধা

বর্তমানে প্রায় সমস্ত গাড়িগুলোতে টিউবলেস টায়ার দেয়া হচ্ছে।  মানে টায়ারের  ভিতরে কোন টিউব থাকে না। টাইয়ারে ভিতরে সরাসরি হাওয়া ভরা যায়। যেখানে আগেকার গাড়িগুলোতে টিউবওয়ালা টায়ার ব্যবহার করা হতো।  মানে টায়ারের ভিতরে একটা বেলুনের মত টিউব থাকতো। যার ভিতর হাওয়া ভরা হতো।  কিন্তু আস্তে আস্তে এই টিউবওয়ালা টায়ার নিশ্চিহ্ন হয়ে যার পিছনে কারণ কি?  আসলে কতটা ভালো এই টুইবলেস টায়ার। তাই বন্ধুরা আজকে আমরা এই লেখাতে টিউবলেস টায়ারের প্রচলন এত বেশি হয় যার পিছনে কারন কি বা টিউবলেস টায়ার টিউব টায়ারের থেকে কি কি এক্সট্রা সুবিধা পাওয়া যায় সেই ব্যাপারে একটু ভালো ভাবে জানবো। তাই লেখটি সম্পূর্ণ অবশ্যই পড়ুন।



১. টিউবওয়ালা টায়ারের যদি কোনো কারণে চাকা পাংচার হয়ে যায় তাহলে চাকা থাকে সম্পূর্ণ হাওয়াটা একেবারে বেরিয়ে যায়। তাই যদি কোন শুনশান রাস্তায় এই টিউবওয়ালা চাকা পাংচার হয়।  যেখানে আশেপাশে কোন মেকানিক নেই তাহলে আমাদের অনেক বড় বিপদে পড়তে হয়। সেই অবস্থায় যদি আমরা সেখান থেকে বাইকটাকে চালিয়ে নিয়ে যায় চেষ্টা করি তাহলে টায়ার-টিউব দুটোই খারাপ হয়ে যেতে পারে। কারণ চাকায় হাওয়া না থাকলে‌ তার উপর যদি আমরা বসে চেপে যাই তাহলে টায়ারের সাইড ওয়াল থেকে ফেটে যাবে। যার ফলে বাধ্য হয়ে গাড়িটাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু টিউবলেস টায়ার এই সমস্যাটা হয় না। টিউবলেস টায়ারের যদি কোনো কারণে  পেরেক ঢুকে বা কিছু ঢুকে পাংচার হয়ে যায়। তাহলে হাওয়াটা একেবারে বেরিয়ে যায়নি । হাওয়াটা ধীরে ধীরে বার হতে থাকে। অনেক সময়তো আবার এমন হয় যে পেরেক ডুকে থাকা সত্ত্বেও সেখান থেকে একদমই হওয়া বার হয়না।  এটা হয় কারন টিউবলেস টায়ার টায়ারের ভিতরেই সরাসরি হওয়া দেয়া হয়। এর ভিতরে কোন টিউব থাকে না। যার ফলে পাংচার হওয়া জায়গাটা প্রসারিত হতে পারে না। তাই হাওয়াটা একেবারে বেরিয়ে যায় না। 


টিউবলেস টায়ার কি,টিউবলেস টায়ার জেল,টিউবলেস টায়ার,টিউবলেস টায়ার পরিবর্তন,টিউবলেস টায়ার,টায়ার টিউবলেস,টিউবলেস টায়ার লিক মেরামত,টায়ার টিউবলেস করার পদ্ধতি,টিউবলেস টায়ার এল লিগ কিভাবে সাজাবেন,টিউবলেস টায়ার চেঞ্জ,টিউবলেস টায়ার এর দাম,টিউবলেস টায়ার সারানো,টায়ার লিক,টায়ার জেল,টিউবলেস টায়ার রিপিয়ার,টিউবলেস টায়ার জেল এর দাম,টিউবলেস টায়ার রিপেয়ার,টিউবলেস টায়ার লিক সারানো,যে কোনো টায়ার কিভাবে টিউবলেস করবেন,টিউবলেস টায়ার রিপেয়ারিং,tubeless tyres,tubeless,tyre,tubeless tyre puncture,tubeless tires,tubeless tyre puncture repair,tubeless tire,tubeless vs tube tyre,tubeless tyre fitting,tubeless tyre technology,tubeless tyre vs tube tyre,bike tubeless tyre,tubeless vs tube tires,tyres,tyre tubeless vs tube,tubeless tyre for bike,tubeless ready,which tyre is best tube or tubeless,difference between tube and tubeless tyre,tube tyre,tubeless vs tube bike tires
টিউবলেস টায়ার

উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, তাহলে আপনি যদি একটা বেলুনের গায়ে সুচ ফোটান তাহলে বেলুনটা একেবারে ফেটে যাবে। কিন্তু আপনি যদি সেই বেলুনটার গায়ে একটা সেলোটেপ মেরে দিয়ে তার উপর দিয়ে সুচ ফোটানো। তাহলে দেখবেন বেলুনটা একেবারে ফাটবে না সেই ফুটো দিয়ে আস্তে আস্তে হওয়া বার হবে। এটা হয় কারণ ছিল সেলোটেপ মেরে দিলে সেই জায়গাটার প্রসারিত হতে পারে না। যার ফলে বেলুনটা একেবারে ফেটে যায় না। মানে রবারতো টানলে লম্বা হয় কিন্তু সেলোটেপ তো আর টানলে  লম্বা হয় না। তাই শুধু যখন রবার থাকে তখন তার গায়ে ছোট একটা ফুটো হলে ভিতরের বাতাস সেই ফুটোর উপরে চাপ দিয়ে ফটোটাকে বড় করে বাতাস গুলো একেবারে বেরিয়ে যায়।  কিন্তু সেলোটেপ মারলে সেই জায়গাটা সেই রকম আরো প্রসারিত হতে পারে না। যার ফলে সেখান থেকে বাতাস একেবারে বেরিয়ে যেতে পারে না। ঠিক এখানেও সেই নিয়ম টা কাজ করে।  


টিউবল টায়ারের পাংচার  হওয়ার সময় টায়ারের সাথে সাথে টিউবটাও ফুটো হয়ে যায়। আর টিউবটা বেলুনের মত প্রসারিত হতে পারে।  যার ফলে বাতাসটা একেবারে  বেরিয়ে যায়।  কিন্তু টিউবলেস টায়ারের টিউব থাকে না বলে ফুটো হয়ে গেলে সেই ফটোটা প্রসারিত হতে পারে না। যার ফলে বাতাসটা সেখান দিয়ে একেবারে বার হয়ে যায় না। এখানে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে টিউব টায়ারের তো টায়ার থাকে তাই টিউব ফুটো হয়ে গিয়ে টিউব থেকে  হাওয়া বেরিয়ে যায় যাক না টিউবলেস টায়ারের মত করে টায়ের  ভিতরে তো হওয়াটা আটকে থাকতে পারে। কিন্তু নাও বন্ধুরা টিউবলেস টায়ার টিউবলেস করার জন্য টায়ারটাকে সব দিক থেকে সীল  করতে হয়। যার ফলে টাওয়ারের ভিতরে হওয়াটাকে আটকে রাখা যায়। কিন্তু টুইব টায়ারের সেটা করা হয় না। টিউব টায়ারে ভিতরে টুইব থাকার জন্য টায়ারটাকে সব দিক থেকে সিল করা হয় না। যার ফলে টিউব থেকে হাওয়া বেরিয়ে যাওয়া মানেই চাকা থেকে হাওয়া বেরেই যাওয়া।এই জন্যই টিউবলেস টায়ার পাংচার হয়ে গেলেও সেই গাড়ি নিয়ে আপনি অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারবেন এবং মেকানিকের কাছে গিয়ে সেটা সারিয়ে নিতে পারবেন।


২.  টিউবওয়ালা টায়ারে যদি কোনো কারণে  টায়ারটা  কোন স্থান থেকে দুর্বল হয়ে যায় তাহলে সেখান দিয়ে টিউবটা বেলুনের মতো ফুলে বাইরে বেরিয়ে এসে বেলুনের মত ব্লাস্ট হয়ে যায়। তাই এটা যদি চলন্ত গাড়িতে হয় তাহলে হঠাৎ করে চাকা থেকে হাওয়া বেরি যাওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু টিউবলেস টায়ার এটা হয়না। যেমনটা আমি আগেই বললাম যে, টিউবলেস টায়ারে  কোন স্থান থেকে পাংচার হয়ে গেলে বা টায়ারটা ফেটে গেলে সেখানে দিয়ে হাওয়াটা ধীরে ধীরে বার হয়। তাই টিউবলেস টায়ারে হঠাৎ করে চাকা ব্লাস্টের মতো ঘটনা ঘটে না। যার ফলে এই টিউবলেস টায়ারের কিছুটা দুর্ঘটনার হাত থেকেও বাঁচা যায়।



৩.টিউবওয়ালা টায়ারের  টায়ারের ভিতরে টিউব থাকে তাই গাড়ি চলার সময় সর্বদা টায়ার এবং টিউবের মধ্যে একটা ঘর্ষণ হতে থাকে। আর এই ঘর্ষণের ফলে হয় কি চাকা একদম ফ্রিলি ঘুরতে পারে না। কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাই এই টিইবওয়ালা  টায়ারে ইঞ্জিনকে একটু বেশি জোর দিতে হয় চাকাকে  ঘোরানোর জন্য। যার ফলে‌‌ এই টিউবওয়ালা টায়ারে কিছুটা মাইলেজ কমে যায়। কিন্তু টিউবলেস টায়ারের ভিতরে কোন টিউব থাকে না বলে কোন ঘর্ষন হয় না এবং টায়ারটা  ফ্রিলি ঘুরতে পারে।আবার এই ঘর্ষণের ফলে টায়ার এবং টিউব এর লাইফও কমে যায়। কারণ টায়ার এবং টিউব ঘষতে ঘষতে টায়ার এবং টিউব দুটোই ক্ষয় হতে থাকে। রাস্তার সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে টায়ারতো উপর থেকে ক্ষয় হয়। আবার ভিতরে টিউবের সাথে ঘর্ষণের ফলে ভেতর থেকেও কিছু ক্ষয় হয়। যার ফলে এই টিউবওয়ালা টায়ার  একটু তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায়। তাই এই কারণে টিউবলেস টায়ার বেশিদিন চলে টিউব টায়ারে থেকে।

 

 

৪.টিউবওয়ালা  টায়ারের টিউব এবং টায়ার এই দুটো মিলে একটু বেশি ভারী হয়ে যায় টিউবলেস টায়ারের থেকে। আর চাকা ভারী হয়ে গেলেই তো চাকা ঘোরাতে ইঞ্জিনকে বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।  যার ফলে এই ভারীর জন্য টিউবওয়ালা টায়ারের গাড়িতে টিউবলেস টায়ারের গাড়ি থেকে একটু কম মাইলেজ পাওয়া যায়। এই কারণেও টিউবলেস টায়ারে  টিউব টায়ারের থেকে একটু বেশি মাইলেজ পাওয়া যায়।




 ৫. টিউবওয়ালা টায়ারে পাংচার সারাতে গেলে চাকা সম্পূর্ণ খুলতে হয়। তারপরের টায়ারের  ভেতর থেকে টিউব বার করে পাংচার খুঁজে ঘষাঘষি করে আঠা লাগিয়ে টাবলি মারতে হয়। যেটা

 অনেকটা পরিশ্রমের এবং সময় সাপেক্ষ কাজ।কিন্তু টিউবলেস টায়ারে এমনটা নয়। টিউবলেস টায়ারে পাংচার সারাতে গেলে চাকা খোলা খুলির কোন দরকার নেই‌।  চাকার উপর দিয়ে পাংচার খুঁজে একটা ছুয়ের মত প্রোব দিয়ে এক ধরনের রবার  টিপস ঢুকিয়ে দিলেই পাংচার সারানো হয়ে যায়। যার ফলে এই টিউবলেস টায়ার পাংচার রিপেয়ার করতে টিউব টায়ারের মত এত শ্রম এবং সময় দিতে হয় না। এই দিক থেকেও টিউবলেস টায়ার এগিয়ে।

 

 

৬. টিউবওয়ালা টায়ারে চাকাতে হাওয়ার প্রেসার কম থাকলে বা গাড়িতে বেশি লোড করলে চাকা হালকা বসে গিয়ে গাড়ি চলার সময় চাকার দলাদলি করে। যার ফলে সেই সময়ে গাড়ির হ্যান্ডেলিং এবং স্টেবিলিটি কমে যায়। কিন্তু টিউবলেস টায়ার সেটা হয় না। টিউবলেস টায়ারে হওয়ার পেশার কম থাকলেও চাকা বসে গেলেও সেটা দুলাদুলি করে না। এর জন্য এই টিউবলেস টায়ার হ্যান্ডেলিং স্টেবিলিটি ভালো পাওয়া যায়। এই অ্যাডভান্টেজ গুলো পাওয়া যায় টিউবলেস টায়ারে।

 

 

এমনটা নয় যে টিউবলেস টায়ারের সবদিক থেকেই অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। এর কিছু খারাপ দিকও আছে। যেহেতু এই টিউবলেস টায়ারের টায়ারের ভিতরে কোন টিউপ থাকে না সরাসরি রিমের উপরই টায়ার  ফিট হয় এবং তার মধ্যে হাওয়া দেয়া হয় তাই  টায়ারের টায়ার পরিবর্তন করার সময় একটু যত্ন সহকারে এবং সময় নিয়ে করতে হয়।  না হলে টায়ার এবং রিমের যুক্ত স্থান থেকে হাওয়া বের হতে পারে। তাই টায়ার পরিবর্তন করার সময় এটা একটু দক্ষ মেকানিক দ্বারা করাতে হয়।

 

 দ্বিতীয়  অপকারিতা হল, যদি কোন কারনে এই টায়ারে টায়ারের সাইড ওয়াল থেকে পাংচার হয়। তাহলে ধরে নিন, আপনি সেই টায়রার আর ব্যবহার করতে পারবেন না।  কারণ টায়ারের সাইড ওয়াল অনেক পাতলা হয়। যার ফলে এই টায়ারের যে পাংচার ছাড়ানোর পদ্ধতি সেটাই টায়ারের সাইড ওয়ালে কাজে লাগে না।‌ তাই সাইড ওয়ালে পাংচার হলে আপনি এই টায়ার আর ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু টিউবওয়ালা টায়ারে  এই সমস্যা হয়না। টিউবওয়ালা টায়ারে  সাইড ওয়াল থেকে পাংচার হলেও আপনি সেই টায়ার ব্যবহার করতে পারবেন। যদিও এটা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ টায়ারের সাইড ওয়াল থেকে পাংচার হওয়ার সম্ভাবনাটা একশোর মধ্যে এক পার্সেন্ট থাকে না।

 

আর তৃতীয়  অপকারিতা হলো, টিউবওয়ালা টায়ারের থেকে টিউবলেস টায়ারের দাম একটু বেশি হয়। কিন্তু এটা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই কারণ টিউবলেস টায়ার হালকা হওয়ার জন্য তার সারা লাইফে এতটা জ্বালানি সাশ্রয় করে দিয়ে যাবে সেটাকে ধরে আপনি আল্টিমেট হিসাব করে দেখলে টিউবলেস টায়ার ওই বেশি দাম দিয়ে কিনেও আপনার অনেক লাভ হয়ে যাবে।

 

 এই সামান্য কিছু অপকারিতা ছাড়া টিউবলেস টায়ার সবদিক থেকে ভালো। এগুলোকে ভালোভাবে  অপকারিতা  বলাও যাবে না। এই কারনেই বর্তমানে প্রায় সমস্ত গাড়িগুলোতে টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

 

 

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন