কাতার বিশ্বকাপে অফসাইড প্রযুক্তি

কাতার  বিশ্বকাপে আধা-স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি 


কাতার বিশ্বকাপে বেশকিছু নতুন নিয়ম এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমাবেশ ঘটানো হয়েছে  । সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয় হল ফিফারনতুন অফসাইড প্রযুক্তি। ২০২২ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে ইকুয়েডরের প্রথম  গোলটি বাতিল করার পর অনেকেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি । এরপর আর্জেন্টিনা বনাম সৌদি আরব, স্পেন বনাম জার্মানি সহ বেশ কয়েকটি চরম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে গোল খালি চোখে দেখতে ঠিকঠাক মনে হলেও প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে তা বাতিল করে দেয়া হয়। এর কারণ হলো সেমি অটোমেটেড অফসাড প্রযুক্তি নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা । ফুটবল ম্যাচ পরিচালনায় কাজে লাগানো হয়েছে। ফিফা সেমি অটোমেটিক অফসাইড প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে কী আজকের লেখায়।


কাতার বিশ্বকাপ,কাতার বিশ্বকাপে নতুন প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপ ২০২২,বিশ্বকাপে অফসাইডে নতুন প্রযুক্তি,অফসাইড,নতুন অফসাইড প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপে হাইটেক অফসাইড প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপ 2022,কাতার বিশ্বকাপে স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি,অফসাইড প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপে যেসব প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপের প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপে আসছে নতুন প্রযুক্তি,কাতার বিশ্বকাপের খবর,নতুন নিয়মে কাতার বিশ্বকাপে অফসাইড,কতার বিশ্বকাপের অফসাইডে জন্য নতুন প্রযুক্তি
কাতার বিশ্বকাপে অফসাইড প্রযুক্তি 


১৮৭২ সালের ফুটবল খেলায় অফসাইডের নিয়ম চালু করা হয় । এরপর ফুটবলের ইতিহাসে অসংখ্যবার অফইডের নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একজন খেলোয়ারকে তখনই অফসাইড হিসেবে ধরা হয় । যখন তার সামনে প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষক বাদে অন্য কোন খেলোয়াড় থাকে না । তবে গোলরক্ষক বাদে কমপক্ষে একজন খেলোয়ার যদি আক্রমনকারী দলের খেলোয়াড়ের সামনে থাকে সে ক্ষেত্রে অফসাইড হয় না ।  


অতীতের সহকারি রেফারিদের সহায়তায় খালি চোখে দেখে অক্সাইডের সিদ্ধান্ত দেয়া হতো । কিন্তু তাতে অনেক সময় ভুল হয়ে যেত। সেই ভুল শোধরাতে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে ভিআর প্রযুক্তি চালু করা হয় ভিআর অর্থ হল ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারি। অনেক সময় একে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিও বলা হয় । খেলা চলাকালীন সময়ের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ বিচার-বিশ্লেষণ করে মাঠে রেফারিকে সহায়তা করার ব্যবস্থাকে বলা হয়  ভিআর। ভিআর আসার পরেও বিতর্ক যেন পুরোপুরি থামছিল না।

তাই ফুটবলের অফসাইডকে নিখুঁত করতে গত তিন বছরের চেষ্টায় ফিফা একটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। একে বলা হচ্ছে সেমি আটোমেটেডে অফসাইড প্রযুক্তি। এর সাহায্যে থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কঠিনতম অফ  সাইড সমস্যার অনেক বেশি নিখুঁত এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। 

 

প্রতিটি বিশ্বকাপের অফিশিয়াল ফুটবলের একটি নাম রাখা হয় । এবারের কাতার বিশ্বকাপের বলের নাম আল  রিহালা,  যার অর্থ ভ্রমণ। এবারের এই বলটি খানিকটা ভিন্ন । একে বলা হচ্ছে কানেক্টেড বল। কারণ এই বলের ঠিক মাঝখানে একটি বিশেষ সেন্সর বসানো হয়েছে। এই সেন্সর অফসাইড নির্ণয়ে অত্যন্ত নিখুত ভাবে কাজ করে। শুধু বলই নয় প্রতিটি ফুটবলারের শরীরের ২৯ ধরনের নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করার জন্য আর একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে এতে বলা হচ্ছে লিম্ব ট্রাকিং টেকনোলজি। ফুটবল স্টেডিয়ামের উপরের দিকে বসানো ১২টি বিশেষ ধরনের ক্যামেরার সাহায্যে  ফুটবল এবং খেলোয়াড়দের গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়। 


খেলোয়াড়দের শরীরের নড়াচড়া প্রতি সেকেন্ডে ৫০ বার এবং বলের সেন্সর প্রতি সেকেন্ডে ৫০০  বার নিজেদের অবস্থান জানান দেয়। শুধু তাই নয় একজন খেলোয়াড় ঠিক কোন মুহূর্তে বলের কোন অংশে কিক্ করলো সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সে কারণেই কোনো একজন খেলোয়ার যদি অফসাইড পজিশনে থেকে বলটি রিসিভ করে তাহলে বল থেকে সাথে সাথে ভিআর একটি অ্যালার্ট চলে যায়। তখন ভিআর থেকে বল এবং অফসাইডে থাকা খেলোয়াড়ের অবস্থান বিশ্লেষণ করা হয় । এই প্রযুক্তি নিজে নিজেই সব সময় অফসাইড লাইন তৈরি করে বিচার বিশ্লেষণ করতে থাকে । সে জন্য অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি সকল হিসাব নিকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত সকল তথ্য যাচাই করে একজন মানুষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আর সে কারণেই একে সেমি অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি বলা হয়।


নতুন প্রযুক্তির কারণে অফসাইড বিতরকের অবসান হলেও। অনেকেই বলছেন ফুটবলের মতো মানবিক খেলায় রোবটিক প্রযুক্তির ব্যবহার খেলার স্বাভাবিক গতিতে বাধাগ্রস্ত করছে । অতি আধুনিক প্রযুক্তির ফুটবলকে কি আরও উপভোগ্য করেছে নাকি বিরক্তিকর। আপনার মতামত জানান । 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন