ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার উপায়

ঘরে বসে আয় করার সহজ উপায়


ইন্টারনেটের কল্যানে আমাদের জীবনে যত সুবিধা এসেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। করোনা মহামারীর পর থেকে work-from-home বিষয়টির সাথে আমরা সবাই পরিচিত হয়েছি। মহামারীর ধকল কাটিয়ে আবারো স্বাভাবিক হলেও বহু মানুষ প্রথাগত চাকরি বাদ দিয়ে ঘরে থেকে নিজের মতো করে কিছু করার চেষ্টা করছেন। ঘরে বসে আয় করার নানান উপায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন সম্ভব। আজকের লেখায় ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে ।


অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়,টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়,ইনকাম করার নতুন উপায়,অনলাইনে টাকা ইনকাম,অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়,টাকা ইনকাম করার app 2022,ইনকাম করার নতুন উপায় 2022,অনলাইনে আয়,অনলাইন ইনকাম,মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায়,অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে,টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়,ইনকাম করার নতুন উপায়,অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় 2021,অনলাইন থেকে আয় করার উপায়,অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় ২০২১,মোবাইল দিয়ে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
অনলাইনে আয় করার উপায়



ঘরে বসে আয় করার পাঁচটি উপায়


অনেকেই মনে করেন ঘরে বসে আয় করাটা হয়ত অনেক সহজ । কিন্তু বিষয়টি মোটেও সে রকম নয় এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে সহজ বিষয়টি হয়ত কাজের জন্য আপনাকে অন্য কোথাও যেতে হচ্ছে না। কিন্তু সফলতা পেতে চাইলে বাইরে গিয়ে করা যেকোনো কাজের চেয়ে ঘরের কাজে আপনাকে বেশি পরিশ্রম করতে হতে পারে । ঘরে বসে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে ঘরে বসে কি কি ধরনের সার্ভিস প্রদান করা যায়। তারপরে জানার বিষয় হল কোথায় গেলে আপনি সার্ভিসগুলো প্রদান করে আয় করতে পারবেন। সেই বিবেচনায় ঘরে বসে আয় করার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। যা অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোর মাধ্যমে করা যায়। বর্তমানে আপওয়ার্ক ,ফাইবার, freelancer.com ,পিপল পার আওয়ার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে সহজেই কাজ পাওয়া যায়।এইসব মার্কেটপ্লেসে আপনি ঘন্টা হিসেবে অথবা সার্ভিস হিসেবে আপনার কাজের দাম নির্ধারণ করতে পারবেন। দক্ষতা অনুযায়ী যোকোন বিষয়ের ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস ঘরে বসেই করা সম্ভব এবং কাজ শেষে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যমে অথবা সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে পারিশ্রমিক চলে আসবে। 



নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম 


ঘরে বসে আয় করার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ব্লগিং এবং নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে আয়।সে জন্য প্রথমেই আপনাকে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। নানান ধরনের ফ্রী ব্লগ সাইট রয়েছে । যেখানে আপনি আপনার ব্লগ চালু করতে পারেন। এছাড়া বর্তমানে খুব সামান্য টাকা খরচ করেও মোটামুটি ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট এ বিভিন্ন জনপ্রিয় বিষয়ে লেখালেখি করে বা চাহিদা সম্পন্ন বিষয়ক আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে । ধীরে ধীরে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়তে থাকলে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে আয়ের  সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ  মাধ্যম হলো গুগল এডসেন্স। আপনার পাঠকরা গুগলের দেয় বিজ্ঞাপন দেখলে বা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই আপনার উপার্জন শুরু হয়ে যাবে। প্রক্রিয়াটা খুব সহজ কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি। তবে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করতে থাকলে।অবশ্যই সফল হওয়া যাবে । 

আরও পড়ুন - কিভাবে একটি ব্লগার ওয়েবসাইট শুরু করবেন



অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম 


অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অন্য কারো পণ্য বা সেবা প্রচার করে তার বিক্রি বাড়ানো। এর মাধ্যমে আপনি বিক্রিত পণ্যের দাম থেকে নির্ধারিত হারে কমিশন পাবেন । আপনার মাধ্যমে যত বেশি পণ্য বিক্রি হবে। ততো বেশি আয় হবে আপনার। এখন প্রশ্ন হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোথায় করা যায় । এর আসলে নির্দিষ্ট কোনো উত্তর নেই । কারণ অনলাইন প্লাটফর্ম এর সম্ভাব্য সকল মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্যের প্রচার বাড়ানোই এর প্রধান উদ্দেশ্য। সাধারণতঃ ওয়েবসাইটের মালিকেরা তাদের ওয়েব পোস্টে কোন কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপন জুড়ে দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকে। ইউটিউবাররা তাদের ভিডিওতে বিভিন্ন পণ্য বা সেবার প্রচার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে । এছাড়া আপনি চাইলে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন । ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলা হয়। বিশ্বজুড়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে অ্যামাজন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেশকিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আফিলিয়েট মার্কেটিং এর ব্যবস্থা চালু করেছে। 

আরও পড়ুন - অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?



গ্রাফিক ডিজাইন করে ইনকাম 


বর্তমানে ঘরে বসে আয় করার একটি সেরা উপায় হলো গ্রাফিক ডিজাইন । ইন্টারনেটের পরিষদ বৃদ্ধির সাথে সাথে ভিজুয়াল গ্রাফিক্স এর চাহিদাও বাড়ছে। ইদানিং বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইটগুলোতে work-from-home গ্রাফিক ডিজাইনারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখা যায় । এছাড়া প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকলে মার্কেটপ্লেস থেকে আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠান কাজ করেও বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করা সম্ভব । গ্রাফিক ডিজাইন যেহেতু একটি জনপ্রিয় স্কিল  তাই ক্ষেত্রে কাজ পেতে বেশ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। গ্রাফিক ডিজাইনে চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিং ছাড়াও উপার্জনের আরেকটি ক্ষেত্র আছে। আর তা হল বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গ্রাফিক টেম্পলেট বিক্রি করা। বিভিন্ন দিবস কেন্দ্রিক শুভেচ্ছা ডিজাইন, চাকরির সিভি, ইমেইল টেমপ্লেট বুক কভার ফেসবুক ইউটিউব এর ব্যানার লোগো সহ চাহিদাসম্পন্ন যেকোন বিষয়ের গ্রাফিক টেম্পলেট তৈরি করে স্টক সাইটগুলোতে বিক্রি করা যায়। ফ্রিকিক, সাটার স্টক , ইস্টকসহ বহু ওয়েবসাইটে মানসম্পন্ন গ্রাফিক টেম্পলেট বিক্রি করে যে কোন চাকরির চেয়ে বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। অনেকেই পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জনের আগেই ঘরে বসে উপার্জনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।কিন্তু কাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা আর দক্ষতা থাকলে কিছুটা দেরি হলেও সফলতা অবশ্যই আসবে । বাংলাদেশে কাজের দক্ষতা অর্জনের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক অভাব রয়েছে।

আরও পড়ুন - গ্রাফিক্স ডিজাইন কি‌?



ইউটিউবিং করে করে ইনকাম 


বর্তমানে ঘরে বসে ইনকাম করার সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো ইউটিউবিং। বিভিন্ন দিক থেকেই সামাজিক মাধ্যম গুলোর মধ্যে ইউটিউব সেরা অবস্থানে রয়েছে। তার অন্যতম একটি কারণ হলো এই প্লাটফর্ম থেকে খুব সহজেই আয় করা যায় । স্মার্ট ফোন আছে কিন্তু ইউটিউব ব্যবহার করে না এমন মানুষ হয়তো খুব কমই আছে । কারণ প্রতিটি স্মার্টফোনে ইউটিউব অ্যাপ আগে থেকেই ইন্সটল করা থাকে। তাই এই প্ল্যাটফর্মের দর্শকের কোন অভাব নেই। ইউটিউব এর বিশাল অডিয়েন্সের বিপরীতে কনটেন্টের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । এই কনটেন্টে চাহিদা পূরণ করতে আপনিও ইউটিউবিং শুরু করতে পারেন। যেকোনো ধরনের কনটেন্ট দিয়েই ইউটিউব থেকে আয়ের সুযোগ রয়েছে। তবে বাংলা ভাষায় বহু মানহীন ভিডিওতে ইউটিউব সয়লাব হয়ে আছে। বহু লোক আলতু-ফালতু কনটেন্ট আপলোড করেছি ইউটিউবে জনপ্রিয় হতে চায় । অনেকে দু-একটি ভিডিও দিয়েই হতাশ হয়ে পড়েন। ইউটিউবের রাতারাতি সফলতা আসে না।এখানে টাকা উপার্জন করা যতটা সহজ টিকে থাকা ততটাই কঠিন। ইউটিউব এর সফলতা অর্জন করতে আপনাকে বেশ কিছু দক্ষতা অর্জন করতে হবে । ভিডিও এডিটিং তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া আপনার কনটেন্ট এর ধরন অনুযায়ী আপনার আরো কিছু স্ক্রিল এর দরকার হতে পারে ।  কোন একটি ইউটিউব চ্যানেল যখন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করে এবং বিগত এক বছরের মধ্যে চ্যানেলটি ৪০০০ ঘণ্টার বেশি দেখা হলে ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন এর যোগ্যতা তৈরি হয় । ইউটিউব অনুমোদন দিলে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে উপার্জিত টাকা সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে চলে আসবে । 

আরও পড়ুন - ইউটিউব চ্যানেল থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করে


ঘরে বসে উপার্জন করার বিষয়টি এমন নয় যে আজকে শুরু করলাম আর কাল থেকেই টাকা আসবে । অনলাইনে নানা প্রলোভন এবং প্রতারণার ফাঁদ রয়েছে । তাই সতর্ক হয়ে সবকিছু জেনে বুঝে অনলাইনে আয় করার পথ বেছে নিতে হবে। রাতারাতি টাকা কামানো যায় এমন সব মাধ্যমে এড়িয়ে যাওয়া সবচেয়ে ভাল।কারণ এমন জায়গায় আপনি কখনোই টেকসই ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন না । সবশেষে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে দক্ষতা থাকলে টাকা আপনা আপনি আসবে । তাই অন্ধের মত টাকার পিছে না ছুটে দক্ষতা অর্জনের সময় দেওয়া উচিত ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন